পাওয়ার প্লান্ট ইন্টারভিউ প্রশ্নোত্তর পর্ব - 4

1. গ্যাস ও ডিজেল জেনারেটরের মধ্যে প্রধান পার্থক্য কি?

উত্তর:  

  • গ্যাস জেনারেটর চলে ন্যাচারাল গ্যাস/LPG-তে, ডিজেল জেনারেটর চলে ডিজেলে।
  • গ্যাস ইঞ্জিনে স্পার্ক ইগনিশন (SI), ডিজেল ইঞ্জিনে কমপ্রেশন ইগনিশন (CI)।
  • গ্যাস ইঞ্জিনের অপারেটিং কস্ট কম, মেইনটেন্যান্স বেশি দরকার; ডিজেল ইঞ্জিনে অপারেটিং কস্ট বেশি কিন্তু টর্ক বেশি।
  • গ্যাস ইঞ্জিন স্টার্ট হতে একটু সময় নেয়, ডিজেল দ্রুত স্টার্ট হয়।
  • সঠিক রক্ষণাবেক্ষণে ডিজেল ইঞ্জিনের লাইফ তুলনামূলক বেশি এবং গ্যাসের কম।

2. CG170-16, G-3512E, G3516A মডেলের গ্যাস জেনারেটর কীভাবে চালু ও বন্ধ করবেন?

উত্তর:

স্টার্ট:

  • প্রি-স্টার্ট চেক (তেল, কুল্যান্ট, গ্যাস প্রেসার, ব্যাটারি ভোল্টেজ)।
  • গ্যাস ভাল্ভ খুলুন এবং ফুয়েল লাইন লিকেজ চেক করুন।
  • কন্ট্রোল প্যানেল থেকে Auto/Manual Start সিলেক্ট করুন।
  • স্টার্ট কমান্ড দিন এবং প্যারামিটার স্ট্যাবলাইজ হওয়া পর্যন্ত (তেল প্রেসার, RPM, গ্যাস প্রেসার) মনিটর করুন।

স্টপ:

  • No-load condition এ জেনারেটর নামিয়ে আনুন।
  • Cool-down (2–3 মিনিট আইডল রান)।
  • কন্ট্রোল প্যানেল থেকে স্টপ করুন।
  • গ্যাস ইনলেট ভাল্ভ বন্ধ করুন।

অথবা

উত্তর: প্রথমে জেনারেটরের ফুয়েল ও তেল লেভেল চেক করি, তারপর মেইন সুইচ চালু করি। স্টার্টিং কন্ট্রোল ব্যবহার করে সিস্টেম চালু করি। চালু হওয়ার পর পর্যবেক্ষণ করি ভোল্টেজ, তাপমাত্রা ও তেলের প্রেসার। বন্ধ করার সময় লোড কমিয়ে ধীরে ধীরে সিস্টেম বন্ধ করি।


3. জেনারেটরের তেল এবং কুল্যান্ট লেভেল কিভাবে চেক করবেন?

উত্তর: 

তেল: 

ডিপস্টিক দিয়ে ইঞ্জিন ঠান্ডা অবস্থায় চেক করুন (তেল “FULL” ও “LOW” মার্কের মধ্যে থাকতে হবে)।

কুল্যান্ট: 

রেডিয়েটর ক্যাপ খুলে (ইঞ্জিন ঠান্ডা অবস্থায়) বা এক্সপ্যানশন ট্যাঙ্কে লেভেল মার্ক দেখে চেক করুন।

4.জেনারেটর চালানোর সময় কোন কোন সেফটি মেজার নেওয়া উচিত?

উত্তর:

  • পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করুন।
  • লোড নেয়ার আগে ভোল্টেজ/ফ্রিকোয়েন্সি স্থিতিশীল কিনা চেক করুন।
  • ওভারলোড, ওভারস্পিড, লো অয়েল প্রেসার প্রটেকশন সক্রিয় আছে কিনা দেখুন।
  • কোনো লিকেজ থাকলে জেনারেটর চালাবেন না।
  • হট সারফেসে সরাসরি হাত দেবেন না।

5. জেনারেটরের পারফরম্যান্স মনিটরিংয়ের জন্য কোন প্যারামিটারগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর:

  • ভোল্টেজ ও ফ্রিকোয়েন্সি (স্টেবল আছে কিনা)
  • লোড (kW/kVA)
  • অয়েল প্রেসার
  • কুল্যান্ট টেম্পারেচার
  • গ্যাস/ফুয়েল প্রেসার
  • RPM

6. Volvo TAD 734 GE ডিজেল জেনারেটরের প্রধান প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য কি?

উত্তর:

  • 6-সিলিন্ডার ইনলাইন ডিজেল ইঞ্জিন।
  • টার্বোচার্জড ও ইন্টারকুলড।
  • ডিসপ্লেসমেন্ট ~7.2 লিটার।
  • পাওয়ার আউটপুট: প্রায় 230–250 kVA
  • ইলেক্ট্রনিক স্পিড গভার্নর।
  • 50/60 Hz সাপোর্ট।


৬. ডিজেল জেনারেটরের প্রধান প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য কি?

উত্তর: 

এটা একটি শক্তিশালী ডিজেল ইঞ্জিন যা স্থিতিশীল এবং দীর্ঘস্থায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। কম জ্বালানি খরচ, কম শব্দ ও উচ্চ পারফরম্যান্স এটি প্রধান বৈশিষ্ট্য।

7. জেনারেটর অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধ হলে প্রথমে আপনি কী করবেন?

উত্তর:

  • অ্যালার্ম চেক করুন (লো অয়েল প্রেসার, ওভার টেম্পারেচার, ওভার স্পিড ইত্যাদি)।
  •  ফুয়েল সাপ্লাই আছে কিনা দেখুন।
  • কন্ট্রোল প্যানেলের ফল্ট কোড নোট করুন।
  • মেইনটেন্যান্স টিমকে রিপোর্ট করুন এবং রেকর্ডে লিখুন।

8. জেনারেটরের ব্যাটারি কিভাবে পরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবেন?

উত্তর:

  • ভোল্টেজ (12V/24V অনুযায়ী) মাল্টিমিটার দিয়ে চেক করুন।
  • ইলেক্ট্রোলাইট লেভেল চেক করুন (মেইনটেনেন্স টাইপ হলে)।
  • ব্যাটারি টার্মিনাল ক্লিন এবং টাইট রাখুন।
  • মাসে একবার লোড টেস্ট করুন।

9. কিভাবে ফুয়েল সাপ্লাই সমস্যা চিনবেন এবং সমাধান করবেন?

উত্তর:

  • চিনবেন: 

  • ইঞ্জিন স্টার্ট না হওয়া, লোডে RPM ড্রপ, ইঞ্জিন মিসফায়ার, এক্সস্ট কালো হওয়া।

  •  সমাধান:

  • ফুয়েল ট্যাঙ্কে পর্যাপ্ত ফুয়েল আছে কিনা দেখুন।
  • ফিল্টার ক্লগ হলে পরিবর্তন করুন।
  • ফুয়েল লাইন লিকেজ/এয়ার চেক করুন।
  • গ্যাস ইঞ্জিনে গ্যাস প্রেসার লাইন চেক করুন।

10. জেনারেটরের ফিল্টার কতদিন পর পর পরিবর্তন করা উচিত?

উত্তর:

  • অয়েল ফিল্টার: প্রতি 250–500 ঘন্টা।
  • ফুয়েল ফিল্টার: প্রতি 250–500 ঘন্টা।
  • এয়ার ফিল্টার: প্রতি 500–1000 ঘন্টা (ডাস্টি এনভায়রনমেন্টে দ্রুত)।

অথবা 

সাধারণত প্রতিটি ৫০০-১০০০ ঘণ্টা কাজের পর বা প্রস্তুতকারকের নির্দেশনা অনুযায়ী ফিল্টার পরিবর্তন করা উচিত।


11. জেনারেটর চালানোর সময় কোন ধরনের লোড ভারসাম্য বজায় রাখা প্রয়োজন?

উত্তর:

  • ব্যালেন্সড লোড: থ্রি-ফেজ লোডে প্রতিটি ফেজে সমান লোড রাখতে হবে।
  • লোড ফ্যাক্টর: 70–80% লোডে দীর্ঘসময় চালানো ভালো।
  • সার্জ লোড ম্যানেজমেন্ট: মোটর স্টার্টিং লোড অনুযায়ী লোড সিকোয়েন্সিং।

অথবা 

লোড যেনো জেনারেটরের ক্ষমতার মধ্যে থাকে এবং ভারসাম্যপূর্ণভাবে বণ্টন হয়। হঠাৎ লোড বৃদ্ধি বা কমিয়ে না দিয়ে ধীরে ধীরে পরিবর্তন করা উচিত।

12. জেনারেটর থেকে সঠিক ভোল্টেজ ও ফ্রিকোয়েন্সি নিশ্চিত করার পদ্ধতি কী?

উত্তর:

  • AVR (Automatic Voltage Regulator) সেটিং চেক করুন।
  • ইঞ্জিন গভার্নর টিউনিং করে RPM স্থিতিশীল রাখুন।
  • লোড ব্যালেন্সিং করুন।

অথবা 

ভোল্টেজ রেগুলেটর ও ফ্রিকোয়েন্সি কন্ট্রোলার মনিটর করব, প্রয়োজন হলে অ্যাডজাস্ট করব। নিয়মিত মনিটরিং ও রক্ষণাবেক্ষণ অপরিহার্য।

13. জেনারেটর থেকে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে আপনি কী করবেন?

উত্তর:

  • কুল্যান্ট লেভেল চেক করুন।
  • রেডিয়েটর ও ফ্যান কাজ করছে কিনা দেখুন।
  • তাপমাত্রা সেন্সর ও থার্মোস্ট্যাট ঠিক আছে কিনা যাচাই করব।
  • লোড কমিয়ে দিন।
  • যদি টেম্পারেচার নেমে না আসে, জেনারেটর সেফলি স্টপ করুন

14. জেনারেটরের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া কীভাবে করবেন?

উত্তর: 

  • দৈনিক: তেল, কুল্যান্ট, ব্যাটারি ভোল্টেজ, গ্যাস/ফুয়েল প্রেসার চেক।
  • সাপ্তাহিক: অ্যালার্ম চেক, ক্লিনিং, অয়েল লিক পরিদর্শন।
  • মাসিক: ফিল্টার চেক/পরিষ্কার, ব্যাটারি লোড টেস্ট।
  • প্রতি 250–500 ঘন্টা: অয়েল ও ফিল্টার পরিবর্তন।

অথবা 

দৈনিক ও সাপ্তাহিক চেকলিস্ট অনুসরণ করে তেল, কুল্যান্ট, ফিল্টার, ব্যাটারি, সেফটি গিয়ার ও অন্যান্য অংশ পরীক্ষা ও পরিষ্কার করব।

15. জেনারেটর চালানোর সময় পরিবেশগত সমস্যাগুলো কিভাবে মোকাবিলা করবেন?

উত্তর:

  •   সাইলেন্সার ও অ্যাকোস্টিক ক্যানোপি ব্যবহার করে নয়েজ কমানো।
  • এক্সস্ট গ্যাস ট্রিটমেন্ট (SCR/DPF) ব্যবহার করে এমিশন নিয়ন্ত্রণ।
  • তেল ও ফুয়েল লিক প্রতিরোধে নিয়মিত মেইনটেন্যান্স।
  • সঠিক ভেন্টিলেশন ও হিট ম্যানেজমেন্ট।

অথবা 

সঠিক বায়ুচলাচল নিশ্চিত করব, দূষণ কমাতে নির্দিষ্ট জায়গায় স্থাপন করব, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও ত্রুটিমুক্ত অপারেশন নিশ্চিত করব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন